পুঠিয়ায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে লাভবান কৃষক
১০ কাঠা জমিতে আগের মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেন জেহের আলী । দামও পেয়েছিলেন খুব ভালো। এ কারণে এবার ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর হাটের এ চাষি।
জেহের আলী প্রথম ধাপে জমি থেকে পেঁয়াজ তুলেছেন কিছু দিন আগে। ফলন পেয়েছেন কিছুটা কম কিন্তু দাম পেয়েছেন ৩ হাজার আটশত টাকা থেকে ৪ হাজার দুইশত টাকা প্রতি মণ। যা গত বছর তিনি মণপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন সাড়ে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে এসে এখন পেঁয়াজের ফলন ভালো হলেও দাম অনেক কমে গেছে যা প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০/- থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা দরে। এই পেঁয়াজ প্রতি বিঘায় ফলন মিলছে ১১৫-১২০ মণ পর্যন্ত।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যে কারণে কৃষকরা প্রথম ধাপে দামও পেয়েছেন ভালো। সেই সঙ্গে উপজেলাতে উন্নত জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনের উপযোগী হওয়ায় চাষেও প্রতিনিয়ত আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুঠিয়ায় গ্রীষ্মকালীন নাশিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজই চাষ হচ্ছে। এ বছর ৩ হাজার ৪০০ বিঘা জমিতে আবাদের জন্য প্রনদনার ১ কেজি করে বীজ দেওয়া হয়েছে।
পুঠিয়ার জায়গীরপাড়ার চাষি কুদ্দুস এক বিঘা জমিতে চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন এ পেঁয়াজ। প্রতি বিঘার চাষে তাঁর খরচ হয়েছে ৪৫-৫৫ হাজার টাকা। এখন উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম মিলছে ১৭০০ থেকে সাড়ে ১৯০০ টাকা। বাজারে দাম কমে যাওয়ায় খরচ বাদ দিয়ে অল্প কিছু লাভ থাকবে। তবে আগে লাগাতে পারলে এবং ফলন ভালো হলে লাভ দিগুণ হবে।
পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ার কৃতিত্ব চাষিদের দেন শিবপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা। তিনি বলেন, আমরা যেভাবে তদারকি করছি ও নির্দেশনা দিয়েছি, চাষিরা সেভাবে পরিচর্যা করেছেন। এ কারণে ফলন ভালো হয়েছে। তবে প্রথম ফেসে বৃষ্টির কারণে কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার কারনে ফলন কম হয়ে। যা দ্বিতীয় ফেসে এসে তা পুষিয়ে যাবে। সরকারি প্রণোদনায় গত বারের মৌসুমের চেয়ে এবার প্রায় ৩ গুন জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে বলেও জানান।
গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় চাষিদের আগ্রহ অনেক বেড়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার। তাঁর মতে দুই মৌসুম ধরে এ অঞ্চলে এ পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। এখানকার আবহাওয়াও চাষ উপযোগী। চাষিরাও সঠিক নিয়মে পরিচর্যা করায় উৎপাদন ভালো হচ্ছে। তিনি বলেন, এ সময় বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে দাম ভালো পেয়ে উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। আর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসার আগেই যেহেতু এই পেঁয়াজ বাজারজাত করা যায় সে জন্য কৃষকরা এই সময় লাভবান হয়।