তৈলমর্দন করা হতো শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে: কাদের গনি চৌধুরী
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম নানা সংকটে আবর্তিত। এই সংকট তৈরি করেছে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার। বিগত ১৫টি বছর এ দেশের গণমাধ্যম সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে পারে নাই। এ দেশের গণমাধ্যম ফ্যাসিস্ট সরকারের খুন, গুম, লুটপাট, হত্যার তথ্য তুলে ধরতে পারে নাই। বরাবরই স্বৈরাশাসকরা গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করে, যেন মানুষ তাদের দুঃশাসনের তথ্য জানতে না পারে। অনেকে এখন গণমাধ্যমের প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারে না। এটা আমাদের একটা দৈন্যতা।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকে সবসময় জনগণের পক্ষে থাকার কথা ছিল। কিন্তু কীভাবে জানি না জনগণের সঙ্গে গণমাধ্যমের একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের গালির তালিকায় আগে পুলিশ ও
ডাক্তারের নাম থাকতো, এখন সাংবাদিকদের নামও থাকে।’
বিদেশি গণমাধ্যমে এসেছে। আপনি যদি সত্য তুলে ধরতে না পারেন, তবে আপনার ওপর বিশ্বাস থাকবে না।’
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে গুম, খুনের কথা জিঙ্গেস না করে তৈল মর্দন করতেন অনেক দালাল সাংবাদিক। সেটা প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা সভায় পরিণত হতো। এভাবে শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার থেকে মহাস্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট থেকে মহাফ্যাসিস্ট বানানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে দালাল সাংবাদিকরা। এ সত্য আমাদের স্বীকার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা মেধার ভিত্তিতে চাকরি পাওয়ার দাবি নিয়ে এসেছিল। সেই ছাত্রদের নির্মামভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দেখলাম, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ীতে শিশুদের, আমাদের সন্তানতুল্য শিশুগুলোর
বুক ঝঝরা করে দেওয়া হলো। আমরা দেখলাম, তাদের রক্ত পিচঢালা রাস্তায় গড়িয়ে যাচ্ছে। একাত্তরের সেই দৃশ্য আমরা দেখলাম জুলাই-আগস্টে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর কী অপরাধ? তারাই তো আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদেরই এই বাংলাদেশের নির্মাতা হওয়ার কথা ছিল।’ এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন কাদের গণি চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল যাদের, তাদেরই সেদিন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। গলাকাটা মুরগির মতো শিশুগুলো ছটফট করে মরা যায়। সেদিন মিডিয়ার টকশোতে বলা হয়েছে, এরা সন্ত্রাসী। যারা এগুলো বলেছে, তারা কোনো সাংবাদিক হতে পারে না। এরা পোশা কুকুর হতে পারে। এদের ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে অপসাংবাদিকতা করে অনেকে অর্থ-বিত্তের মালিক হয়ে যাচ্ছেন। নানা অজুহাত নিয়ে টাকা চাই। এসব ভুয়া সাংবাদিকরা যেন জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ না পায়।’ এ সময় সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান জানান কাদের গণি চৌধুরী।