বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন

পুঠিয়ায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক

অনলাইন ডেঙ্ক / ৫ দেখেছেন:
আপডেট : বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫

রাজশাহী পুঠিয়ায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার শতশত কৃষক। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রির সময় ন্যায্য দাম না পাওয়ার কারণে হতাশ হয়েছেন তারা। তারা বলছেন, পেঁয়াজে এবারো তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই অনেকে আলের পেঁয়াজ লাগানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে।

জানা গেছে, দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে এগিয়ে রয়েছে রাজশাহী জেলা। দেশে উৎপাদিত মোট পেঁয়াজের বড় একটি অংশ উৎপাদন হয় এ জেলায়। এ বছর বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ আবাদে চাষিদের সার, বীজ, কীটনাশক, জমি চাষ ও দিনমজুরসহ খরচ হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিঘাপ্রতি উৎপাদন হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ মণ। প্রতি মণ পেঁয়াজের মানভেদে পাইকারি বাজার দর বর্তমানে ১ হাজার ১শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা।

পুঠিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জানা গেছে- উপজেলার ৬ ইউনিয়নে এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৩৭৮ হেক্টর জমিতে। এবং উৎপাদন লক্ষমাত্র ৫৫ হাজার ৭৩৭ মেট্রিকটন। যা গত বছর ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছিলো ২৩ হাজার ২০০মেট্রিকটন।

উপজেলার নামাজগ্রাম এলাকার পেঁয়াজ চাষি ইউনুস আহমেদ বলেন, আমি এ বছর এক বিঘা (২০ শতাংশ) জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগিয়েছিলাম। মোটামুটি পেঁয়াজ হয়েছে তবে যে টাকা খরচ হয়েছে। এতে ২ হাজার ৫ শ টাকা মণ থাকলে বেশ কিছু টাকা লাভ হতো। কিন্তু বর্তমানে পেয়াজ ১৫০০ টাকা মণ বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে সকল খরচ ধরলে লাভ হবে না। এতো কষ্ট করে টাকা খরচ করে পেঁয়াজ লাগিয়ে যদি দামটাই না পাই তাহলে আমরা বাঁচব কীভাবে। তাই আমাদের সামনে জুন জুলাই মাস পর্যন্ত বাহির থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করলে কিছুটা ভালো দাম পাবো।

আরেক পেঁয়াজ চাষি মিজানুর রহমান বলেন, আমি ১ বিঘা জমিতে প্রণোদনার গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ লাগিয়েছিলাম। কৃষি অফিস বীজ দিলেও আমাদের সব মিলে বিঘাপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ফলন কম হওয়া এবং দাম অনেক কমে যাওয়ায় আমাদের অনেক টাকা ক্ষতি হবে।

শিবপুর এলাকার পেঁয়াজ চাষি জেহের আলী বলেন, প্রথম ধাপে যারা এই পেয়াজ করেছিল তারা ভালো দাম পেয়েচে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের সাথে যারা চাষ করেছে তারা এখন শুরু থেকেই মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম কম পাচ্ছে। প্রতি মণ ১ হাজার ২শ টাকা থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে । তারপর আবার পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বেচতে গেলে বস্তার জন্য প্রায় আড়াই থেকে ৩ কেজি ঢোলন বাদ দেয়। এতে মণপ্রতি ৩ কেজি বাদ যাওয়াতে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। এক মন পেঁয়াজ দিলে ৩৮ কেজির দাম পাচ্ছি। পাইকারি বাজারের এই সিন্ডিকেট পদ্ধতি বাদ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এই চাষী।

পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার স্মৃতি রানী সরকার বলেন, এবছর গতবারের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি জমিতে মুরিকাটা পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। উৎপাদন বেশি হলে দামটা একটু কম হবেই। তারপরেও চাষিরা অতিরিক্ত সার, কীটনাশক ব্যবহার করে এতেই দেখা যায় তাদের খরচ অনেক বেরে যায়। তবে ফলন ভালো হয়েছে দাম একটু কম থাকলেও লোকসান হবে না। কৃষকদের নিজেদের কারনেই খরচ বেশি হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো দেখুন..
এক ক্লিকে বিভাগের খবর