পোরশায় গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

চলতি রবি মৌসুমে নওগাঁর পোরশায় গমের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত বছরগুলিতে ফলন ভাল হওয়ায় গম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এ উপজেলার কৃষক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকালে এ বছর গমের ফলন ভাল হবে বলে মনে করছেন তারা।
তবে গাছ এবং শীষে ভাল থাকায় বম্পার ফলন হবে বলছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে গম চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ৪ হাজার ১৫০হেক্টর। তবে তুলনামুলকভাবে গত বছরের চেয়ে এবং এবারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী গম চাষ হয়েছে।
উপজেলায় ৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ করা হয়েছে। উন্নত জাতের গম ডাব্লিউএমআরআই-৩, ডাব্লিউএমআরআই-৪, বারী-৩০, ৩২ ও ৩৩ চাষ করেছেন কৃষকরা।
গম চাষে পানি কম লাগে এবং শ্রমিক খরচ কম এবং লাভ বেশি হয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের সাথে গমেরও নতুন জাত উদ্ভাবন হয়েছে। কৃষকরা আশা করছেন বাজারে দাম ভাল থাকলে আগামীতে গমের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে। উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের জালুয়া গ্রামের গমচাষী গনি আমিন ও রেজাউল ইসলাম জানান, এ বছর তারা তাদের জমিতে উন্নত জাতের বারী ৩০সগমের চাষ করেছেন। গম চাষে বিঘা প্রতি প্রায় সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে।
এছাড়াও গম চাষে বিশেষ কোন শ্রমিক খরচ নেই। বীজ বপন থেকে গম উঠানো পর্যন্ত দুইবার পানি সেচ দিলেই হয়। গম ভাল হলে বিঘা প্রতি প্রায় ১৫-২০মণের মতো হবে বলে তারা আশা করছেন।
অপরদিকে নিতপুর ইউনিয়নের শোভাপুর গ্রামের কৃষক সালামত ও বাংগাল পাড়ার বাবুল হাজি জানান, এবার তারা তাদের জমিতে উন্নত জাতের বারী- ৩০ গমের চাষ করেছেন। বোরো ধান চাষে খরচ বেশি হওয়ায় এবং দাম কম হওয়ায় গম চাষের প্রতি তারা বেশি আগ্রহী। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে এলাকার সাধারণ কৃষকদের ঘরে যখন খাবার থাকে না তখন গম থেকে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায় বলে তারা জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মামুনুর রশিদ জানান, কৃষি অফিস থেকে কম পানিতে গম চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দিন-দিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ঠাঁ-ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল বিশেষ করে পোরশা উপজেলায় পানির প্রচুর সমস্যা। পানির সমস্যার কারণে কম পানি সেচের মাধ্যমে গম চাষাবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রণোদনা, প্রদর্শনী ও বীজ সহায়তার আওতায় কৃষি অফিস থেকে ২ হাজার ৪৮২ জন কৃষকে ২ হাজার ৫০০বিঘা জমিতে গম চাষের জন্য উন্নত জাতের গমের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।