আলুর দাম বেশি থাকায় নিয়ামতপুরে তিনগুণ জমিতে আলু চাষ

গত বছর আলুর বীজের কেজি ছিল ২০ টাকা, বছর ঘুরতেই তিন গুণ বেড়ে সে বীজ কৃষকদের কিনতে হয়েছে ৬০ টাকা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দামও। তবুও গত বছরের মতো আশানুরূপ মুনাফা লাভে আলু চাষ করে চমক দেখিয়েছেন নওগাঁর নিয়ামতপুরের কৃষকরা। তবে আলুর ন্যায্য দাম পেতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর, গুজিশহর, বরিয়া, শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের ভাদরন্ড, সমাসপুর, বেলগাপুর, তুলারবাঐল, হিন্দুরবাঐল এলাকায় সরজমিন দেখা যায়, মাঠে মাঠে আলু আবাদে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষকরা। কেউ জমির আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ বা সার ছিটাচ্ছেন আবার অনেকে কান্দি তৈরিতে ব্যস্ত। গত বছর আলুর ভালো দাম পাওয়ায় এ বছরও আলু আবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। আলুর দাম বেশী থাকায় তিনগুন জমিতে আলু চাষ হয়েছে।
নিয়ামতপুর উপজেলার আলু চাষি আনজুমান পাভেল বলেন,গত বছর আলুর বীজ ২০ টাকা কেজি দরে কিনেছি, আর এইবার তা ৬০ টাকা। সার-কীটনাশকের দামও বেশি। ঋণ করিয়া এইবার আলু চাষ করছি, যদি গত বছরের মতো আলুর দাম না পাই, তাহলে পথে বসতে হবে। আলু চাষের জন্য পরিবেশ অনুকূলে থাকলেও চাহিদামতো সার পাওয়া যাচ্ছে না, আবার কোথাও সার পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে চড়া দামে এমন অভিযোগ তুলে কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, সার বেশী দামে কিনতে হচ্ছে। আবার সার কেনার রসিদে নায্য টাকা লিখে দিচ্ছেন সার ডিলাররা। প্রতিবাদ করলে বলে নিলে নেন, না নিলে নাই। বাধ্য হয়ে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। শুধু সার না, কীটনাশকসহ সব কৃষি উপকরণ কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।
কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘এইবার আলু চাষের জন্য পরিবেশ অনুকূলে আছে। ভালো পরিচর্যা করার কারণে গাছগুলো দ্রুত বড় হচ্ছে। গতবার জমি থেকেই আলু বিক্রি করছি ৫০ টাকা কেজিতে। তবে এবার চাষে ব্যয় হচ্ছে অনেক, তাই ৭০ টাকার নিচে আলুর দর হলে আমাদের ক্ষতি হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর শীত আসার আগেই কৃষকরা আগাম আলু লাগিয়েছেন। এ বছর নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় ৩ হাজার ১শ ২০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে গেছে। রোগবালাই দমনে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করছে কৃষি বিভাগ।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, কৃষকেরা ভালো দাম দেখে আলু চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এ বছর উপজেলায় ৩ হাজার ১শ ২০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সার, বীজ ও বালাইনাশক সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। এবার ফলন বিঘা প্রতি ৭৫-৮০ মন পর্যন্ত হতে পারে।