বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন

সাকিব আবার ফেল, ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা

অনলাইন ডেঙ্ক / ১৩ দেখেছেন:
আপডেট : শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২৫

গত ২১ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে দেওয়া বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষায়ও সাকিব আল হাসান ব্যর্থ হয়েছেন বলে খবর। দিনদুয়েক আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে সেই পরীক্ষার ফলাফল জেনেছে বিসিবি। তার ভিত্তিতে সিলেটে কাল গাজী আশরাফ হোসেন বিষয়টিকে বলেছেন ‘শকিং’। তবে কাল রাত পর্যন্ত লিখিতভাবে ফলাফল না জানতে পারায় বিসিবি বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারছে না।

এদিকে সাকিবের চেন্নাইয়ে দেওয়া পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। আইসিসির অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের নিয়ম অনুযায়ী, পরপর দুটি পরীক্ষায় অ্যাকশন ত্রুটিযুক্ত প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বোলারের পরের এক বছর কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটেই আর বোলিং করতে পারার কথা নয়। সে ক্ষেত্রে সাকিব যদি সত্যি সত্যি চেন্নাইয়েও ফেল করে থাকেন, এখন থেকে পরের এক বছর যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে বোলিং নিষেধাজ্ঞায় থাকবেন তিনি।

তবে বিসিবি–সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এই নিয়মের একটু অন্য রকম ব্যাখ্যাই দিয়েছে। তা হলো, সাকিব আপাতত বোলিং করতে পারবেন না, তবে বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিমুক্ত করতে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। তাতে যে মুহূর্তে তাঁর মনে হবে অ্যাকশনে আর সমস্যা নেই, তিনি তখন আইসিসি অনুমোদিত কোনো সেন্টারে অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে পারবেন। কিন্তু তাতেও যদি অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়ে, তাহলে পরের এক বছর বোলিং তো নয়ই, ওই সময়ের মধ্যে অ্যাকশন শোধরানোর পরীক্ষাও আর দিতে পারবেন না।

এদিকে একটি সূত্র এমনও জানিয়েছে, চেন্নাইয়ের পরীক্ষায় আসা নেতিবাচক ফলটিতে ‘টেকনিক্যাল এরর’ বা কারিগরি ত্রুটি থেকে থাকতে পারে বলে তাঁরা শুনেছেন। সে ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার ফলাফল ধর্তব্যের মধ্যে আনা হবে না। সাকিব ‘দ্বিতীয়’ পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন আবারও।

এ ব্যাপারে কাল রাতে বিসিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আন–অফিশিয়ালি শুনেছি যে সে চেন্নাইয়েও অ্যাকশনের পরীক্ষায় ফেল করেছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগপর্যন্ত এ ব্যাপারে পরিষ্কার কিছু বলা সম্ভব নয়।’

এর আগে গতকাল শোনা গিয়েছিল ২১ ডিসেম্বরের পরীক্ষার ফলাফল নেতিবাচক আসায় চেন্নাইয়ে এরই মধ্যে আরেকবার পরীক্ষা দিয়েছেন সাকিব। যদিও এই তথ্য কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি। বরং জানা গেছে, গত চার দিন সাকিব যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন।

গত সেপ্টেম্বরে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ইংলিশ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ডিভিশন ওয়ানের একটি ম্যাচে। টুর্নামেন্টে সারের হয়ে সমারসেটের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলেছিলেন সাকিব। টন্টনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ১১১ রানে হেরে গিয়েছিল সারে। কিন্তু দুই ইনিংসে ৬৩ ওভার বোলিং করে সাকিব নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। ম্যাচের প্রায় দুই মাস পর জানা যায়, ওই সময়ে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ম্যাচের দুই আম্পায়ার।

সাকিব পরে ২ ডিসেম্বর বার্মিংহামের অদূরে লাফবরো ইউনিভার্সিটির মেডিকেল বিভাগে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন। পরীক্ষার পর সাকিবের কাছের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছিল, লাফবরোর বিশেষজ্ঞদের সামনে মোট চার ওভার বোলিং করা সাকিব আশাবাদী ছিলেন, তাঁর বোলিং অ্যাকশনে কোনো ত্রুটি ধরা পড়বে না।

তবে ওই চার ওভারের মধ্যে প্রথম তিনটি ওভার তিনি করেছিলেন তাঁর নিয়মিত অ্যাকশনে। শেষের এক ওভার বোলিং করেন একটু জোরের ওপর, মূলত যে অ্যাকশনের কারণে কাউন্টির ম্যাচে আম্পায়ারদের কাছে তাঁর অ্যাকশন ত্রুটিযুক্ত মনে হয়েছিল বলে সাকিবের ধারণা।

১০ ডিসেম্বর পাওয়া লাফবরোর ফলাফলে জানা যায়, তাঁর অ্যাকশন অবৈধ। ২১ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে দেন দ্বিতীয় পরীক্ষা, যেটির ফলাফল সত্যি সত্যি নেতিবাচক হলে বোলিং থেকে দূরে সরে যেতে হবে বাঁহাতি স্পিনার সাকিবকে। তাঁকে খেলতে হবে শুধুই একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে। তবে আইসিসির বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, যদি বোলারের মনে হয় তাঁর অ্যাকশন পরীক্ষার রিপোর্ট ত্রুটিপূর্ণ, তাহলে এ ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ আছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো দেখুন..
এক ক্লিকে বিভাগের খবর