বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন

অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও বার্তায় সরব হলেন নানক

অনলাইন ডেঙ্ক / ৮ দেখেছেন:
আপডেট : শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

ফের ভিডিও বার্তায় সরব হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গণহত্যায় অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর কবির নানক। ওই ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে প্ররোচিত সরকার শেখ হাসিনাকে ফাঁসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তার ওপর অত্যাচারের খড়গ নেমে আসছে।

শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অজ্ঞাত স্থান থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় বক্তব্যের শুরুতে আত্মগোপনে থাকা গণহত্যায় অভিযুক্ত এই আ.লীগ নেতা বলেন, ‘আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের সকলকে ব্যথিত করে তুলেছে। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ হাসফাস করছে। আজ জনগণের সামনে একটি প্রশ্ন- বাংলাদেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? কোনদিকে যাচ্ছে?’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনা পরিচালিত সরকারকে হটিয়ে বাংলাদেশ তার গতি হারিয়েছে। আর্থ সামাজিক, অর্থনীতিক অগ্রগতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বারবার প্রশংসিত বাংলাদেশ আজ অস্থিতিশীলতার চোরবালিতে ডুবে গেছে। আজকের বাংলাদেশে সবকিছুর চেয়ে বোধহয় মানুষের জীবনের দামটাই কম।

নানক বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট চালাচ্ছে। তাদের হত্যা করছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল মানুষদের ওপর অবর্ণনীয় দমন-নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।

‘শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই সব মৃতদের অনেকেই জীবিত আছে। টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মামলার বাদি বানানোর পরিকল্পিত কৌশলের গোমড়ও ফাঁস হয়েছে।’

আত্মগোপনকারী এই নেতা বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিকভাবে প্ররোচিত হয়ে শেখ হাসিনাকে যে ফাঁসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাও ইতিমধ্যে প্রমাণিত। বাদ বিচারহীনবাবে চলছে গণগ্রেপ্তার। এই সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তার ওপর অত্যাচারের খড়গ নেমে আসে।’

তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজকে গভীর সংকটে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার গতিমুখ বদল করে একত্বাবাদিতা কায়েম করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস মুছে ফেলার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রাচার থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলো বাদ দিয়েছে। জয় বাংলা জাতীয় দিবসের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘একদিকে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি। এর ফলে দুর্বিসহ হয়ে ওঠেছে মানুষের জীবন।’

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় হাসিনা সরকারের। ওই ঘটনার পর অন্যদের সঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান ওই সরকারের মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানকও।

তবে গত ২৪ অক্টোবর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে সরব হয়েছিলেন তিনি। প্রায় ১১ মিনিট ফেসবুক লাইভে বক্তব্য রাখেন তিনি। লাইভে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই।’

এরপর গত দুই মাসে তার কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। হঠাৎ করেই গত রাতে লাইভ ভিডিও বার্তায় সরব হতে দেখা যায় পতিত সরকারের এই মন্ত্রীকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো দেখুন..
এক ক্লিকে বিভাগের খবর