রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের পাশে লিচু চত্বরে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি শুরু করা হয়।

কর্মবিরতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন শাখায় তালা ঝুলতে দেখা গেছে। অধিকাংশ কর্মকর্তাই কার্যালয় খোলেননি। ফলে প্রশাসনের প্রায় সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।

সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে লিচু চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হতে শুরু করেন। পরে তারা দাবিদাওয়া জানিয়ে বক্তব্য দেন। এতে বক্তারা বলেন, পোষ্য কোটা কোনো কোটা নয়, এটা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। তাদের সন্তানেরা সব শর্ত মেনেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তারা ১ শতাংশ নয়, ৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার বহাল চান। তাদের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত তাদের কর্মবিরতি। তবে এ সময় পরিবহন, পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বলেন, সারা দেশে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আছে। তাদের কেন বঞ্চিত করা হবেন? তারা কোটার বিপক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সুবিধার আওতায় তারা আছেন, সেটি কোটা নয়। তাদের দাবি না মানা হলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন তারা।

এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি জানান, তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধর্মঘট বা কর্মবিরতি নিয়ে প্রশাসনে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।

এর আগে গত ১ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করে শুধু সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবিতে পরদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহ-উপাচার্য, প্রক্টর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকসহ দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর তারা মুক্ত হন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ওই রাতেই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল বলে ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব।