বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪০ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে বেশি যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গাজীপুরে যৌন হয়রানি

অনলাইন ডেঙ্ক / ৭ দেখেছেন:
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৫

২০২৪ সালে রাজশাহীতে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অন্তত ২৪৫ জন নারী। একই বছরে গাজীপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও উৎক্তের (ইভটিজিং) শিকার হয়েছেন অন্তত ১১৬ নারী।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় অগ্নি প্রকল্পে উঠে আসা এ তথ্য জানায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সহযোগিতায় ব্র্যাকের সঙ্গে যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে আসক। ‘যৌন হয়রানি এবং জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ও প্রতিকারে করণীয়’ শীর্ষক আজকের মতবিনিময় সভাটি সঞ্চালনা করেন আসকের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির।

সভায় স্বাগত বক্তব্যে আসকের চেয়ারপারসন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, এই নির্যাতন, সহিংসতার সংখ্যা কখনো বাড়ে বা কখনো কমে; কিন্তু একজনও যদি সহিংসতার শিকার হয়, তাঁর পাশেও আমাদের দাঁড়াতে হবে। কোনো নারী শুধু মার খেতে বা সন্তান জন্ম দিতে জন্মায়নি। নারী-পুরুষ উভয়েরই সমাজে প্রয়োজন।

এই আইনজীবী আরও বলেন, নারীর প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও বৈষম্য অগ্রহণযোগ্য। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যম নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বরাবরের মতো সচেষ্ট থাকবে এবং একই সঙ্গে আইন ও সালিশ কেন্দ্রও নারীর অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা নেবে বলে তিনি আশা করেন।

অগ্নি প্রকল্পের সমন্বয়কারী আসমা খানম রুবা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে বলা হয়, প্রকল্পের লক্ষ্য হলো সব বয়সী নারী ও কন্যাশিশুকে সুরক্ষিত করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনসমাগম হয় এমন স্থান, কর্মক্ষেত্র ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সব ধরনের হয়রানি ও অপব্যবহার প্রতিরোধ করা। পাশাপাশি যৌন হয়রানি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা প্রচারের জন্য সিএসও , সরকারি, বেসরকারি কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

অগ্নি প্রকল্প সম্পর্কে আরও বলা হয়, জনপরিসরে নারীদের নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত করার স্বপ্নকে সামনে রেখেই ২০২২ সাল থেকে অগ্নি প্রকল্প শুরু হয়। প্রকল্পের অধীন গাজীপুর ও রাজশাহী জেলায় বিশেষ করে পরিবহন, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যৌন হয়রানি এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ করে লিঙ্গ সমতায়নের লক্ষ্যে ১৪টি সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনসহ (সিএসও) সরকারি, বেসরকারি কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে এ দুটি জেলাকে নেওয়া হয়।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্র থেকে রাজশাহী ও গাজীপুর জেলায় ২০২৪ সালে ঘটা যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ, পারিবারিক নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, হত্যা-আত্মহত্যার চেষ্টাসহ নারীর প্রতি বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করে আসক।

সভায় বলা হয়, শিক্ষাঙ্গনে এবং কর্মস্থলে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে উচ্চ আদালতের মাইলফলক রায়ের এক যুগ পেরিয়েছে। রায়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা থাকলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নির্দিষ্ট আইনে রূপান্তর না হওয়া পর্যন্ত সংবিধান অনুযায়ী এ নির্দেশনা আইন হিসেবে কাজ করার কথা থাকলেও প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তাই যৌন হয়রানি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে সভায় জোর দেওয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো দেখুন..
এক ক্লিকে বিভাগের খবর