অফিস সহায়কদের পদোন্নতির দাবিতে রাজশাহী রেল ভবনে বিক্ষোভ
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে কর্মরত এমএলএসএসদের (অফিস সহায়ক) গণহারে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি তুলেছে জাতীয়তাবাদী রেল শ্রমিক দল পশ্চিমাঞ্চল শাখা। এ দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দক্ষ এমএলএসএসদের পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাঁদের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। যাঁরা কম্পিউটার পরিচালনায় দক্ষ, তাঁরাই পদোন্নতি পাবেন। এ জন্য দেড় শতাধিক এমএলএসএসের দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তবে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদ ফাঁকা আছে দুই শতাধিক।
শ্রমিক দলের দাবি, পদ যেহেতু ফাঁকা আছে, তাই সবাইকে গণহারে পদোন্নতি দিতে হবে। তাঁরা বলছেন, অনেকে ৮-১০ বছর ধরে কোনো পদোন্নতি পাননি। তাই এটি তাঁদের অধিকার।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এক কর্মচারীকে নিজ গ্রেডের কয়েক ধাপ ওপরের একটি পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পাইয়ে দিতে সিএমও (প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা) দপ্তরে যান রেল শ্রমিক দলের নেতারা। কিন্তু এ দাবি নাকচ করে দেন সিএমও। এ সময় শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা হয়। তাঁর দপ্তরে থাকা ঠিকাদারেরাও সিএমওর পক্ষ নিয়ে শ্রমিক দলের নেতাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান।
মূলত ওই ঘটনার বিচার দাবি এবং এমএলএসএসদের গণহারে পদোন্নতির দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপরে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা। এ সময় কেউ কেউ জিএম মামুনুল ইসলামের অপসারণও দাবি করেন। কিছুক্ষণ বিক্ষোভ করার পর শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা ফিরে যান।
এর আগে সেখানে বক্তব্য দেন পশ্চিমাঞ্চল রেল শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের শ্রমিকদের প্রতি যে অবমাননা করা হয়েছে, এক সপ্তাহ হলেও আপনি (জিএম) কোনো ব্যবস্থা নেননি। আপনি সিএমওকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। আমাদের অনুরোধ যদি আপনি না রাখতে পারেন, আমরা আর যাব না। কিন্তু কোনো ফাইলে যদি অনিয়ম দেখি, তাহলে তার প্রতিবাদ অবশ্যই করব।’
জিএমের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দিনে যদি গত সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে চান, অবশ্যই চলার গতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই অবশ্যই আমার শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার দেবেন।’
পরে জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকে ৮-১০ বছর ধরে ছোট পদে চাকরি করছে, কিন্তু পদোন্নতি পায়নি। আমরা বলছি, এত দিন পর যেহেতু পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এটা সবাইকেই দিতে হবে। এতে বেতন বাড়বে না, একটা সম্মান পাবে শুধু।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষ কোনো দল বা মতের কর্মচারীদের পদোন্নতি চাইছি না। সবারই পদোন্নতি চাইছি। এ জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু জিএম মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। দেখা হয়নি।’
এ বিষয়ে জিএম মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘পদোন্নতি আমরা দেব, কিন্তু সরকারি নিয়মকানুন তো মানতে হবে। পদোন্নতি দেওয়ার জন্য এখন দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে গিয়ে তো সবাইকে গণহারে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব নয়। গণহারে পদোন্নতির দাবিতে কারা বিক্ষোভ করেছেন, সেটা আমি শুনিনি। সকাল থেকে আমি মিটিংয়ে ছিলাম।’
সিএমও দপ্তরে শ্রমিক দলের নেতাদের সঙ্গে কী হয়েছে, জানতে চাইলে জিএম বলেন, ‘তাঁরা এক কর্মচারীকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। এখন সেটা তার গ্রেডের এক ধাপ ওপরের গ্রেডের হলে হয়। এটা করতে হলে কয়েক গ্রেড ওপরে যেতে হবে। এটাও হয় না।’