বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

রুয়েটের দুই কর্মকর্তার কক্ষে তালা, শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

অনলাইন ডেঙ্ক / ২ দেখেছেন:
আপডেট : বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিকেলে তাদের কক্ষে তালা দেওয়া হয়। এছাড়াও এক শিক্ষক বিভাগে অবঞ্ছত ঘোষণা করা হয়েছে।

দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার রাইশুল ইসলাম এবং জুনিয়র অডিট অফিসার রফিকুল ইসলাম। আর অবঞ্ছিত ঘোষণা করা ওই শিক্ষকের নাম রাকিবুল হাসান।

দুই কর্মকর্তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মায়েন উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। জুলাইয়ে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা দিয়েছেন, বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের পর তারা ক্যাম্পাস ছাড়া হয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তারা ক্যাম্পাসে আসছেন। তারা শুনেছেন, অনেক কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে তাদের পুনর্বাসন করছেন। এর প্রতিবাদে দুজনের কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে।

মায়েন উদ্দিন বলেন, সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে ১২ দফা দাবি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে স্বৈরাচারের দোসরদের শাস্তি দেওয়ার দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন সে রকম কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এদিকে, জুলাই আন্দোলনের সময়ে কটূক্তির অভিযোগে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাকিবুল হাসানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে স্মারকলিপি দিয়েছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর দেওয়া স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম সরকার।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ আগেই ছিল। গত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে হেয় করে তিনি ফেসবুকে একাধিক স্টোরি আপলোড করেছেন।

শিক্ষার্থীদের সরাসরি উদ্দেশ করে রুয়েটের বিভিন্ন পেজে ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং আক্রোশমূলক মন্তব্য ও স্টোরি প্রকাশ করেছেন। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের কটাক্ষ করেও একাধিক স্টোরি প্রকাশ করেছেন, যা একজন শিক্ষক হিসেবে তাঁর নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বের প্রতি প্রশ্ন তোলে। নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর এরূপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ তাঁদের ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। গণ-অভ্যুত্থানকালে তিনি উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে অবস্থান করলেও সম্প্রতি দেশে ফিরে এসে নিজ পদে যোগদান করেছেন, যা বর্তমানে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা রাকিবুল হাসানকে বিভাগ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছেন। একই সঙ্গে কোর্স, থিসিস, সেমিস্টার পরীক্ষাসহ বিভাগের কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে তাকে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি জানান।

অধ্যাপক রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে রুয়েটের যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। যদি যথোপযুক্ত জবাবদিহি না দিতে পারেন, তাহলে প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রুয়েটে আইন উপদেষ্টা না থাকার কারণে এত দিন ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছিল। তারা আইন উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ ওঠা শিক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে ছিলেন। দেশে এসে ১ জানুয়ারি বিভাগে যোগদান করেছেন। শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ তুলেছেন, তা ভিত্তিহীন। তিনি এসব করেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো দেখুন..
এক ক্লিকে বিভাগের খবর